সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও খুলনা-মংলা রেল প্রকল্পের বর্তমান প্রকল্প পরিচালক মো. রমজান আলীর বিরুদ্ধে করা নারী নির্যাতনের মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকৌশলী রমজান আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা খাতুন (২৬) এ অভিযোগ করেছেন।
মামলাটি বর্তমানে রাজশাহীর মহানগর বিচারিক আদালত-৪ এ বিচারের জন্য অপেক্ষামান রয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি মামলাটির শুনানি শুরুর কথা রয়েছে। কিছুদিন আগে বিভিন্ন অভিযোগে রমজান আলীকে প্রধান প্রকৌশলীর পদ থেকে সরিয়ে খুলনা-মংলা রেল প্রকল্পের পরিচালক করা হয়।মামলার নথিপত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালে মো. রমজান আলী ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর রাজশাহীর রাজপাড়া থানার দাসপুকুর এলাকার বাবর আলীর মেয়ে শোভা খাতুনকে (২৬) ৪ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন।
অভিযোগ রয়েছে আগের পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান থাকার তথ্য গোপন করে এবং আগের স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই রমজান আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের সময় রমজানের সঙ্গে শোভার বয়সের পার্থক্য ছিল প্রায় ৩০ বছর। প্রকৌশলী রমজান আলী পাবনার সাথিয়া উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের মো. মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে।
সূত্র মতে, বিয়ের পর দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে কিছুদিন গোপনে সম্পর্ক রক্ষা করে রাজশাহী ও খুলনায় একসঙ্গে বসবাস করলেও পরে তালাক দেয়ার জন্য স্ত্রী শোভা খাতুনকে চাপ দিতে থাকেন রমজান আলী। কিন্তু স্ত্রী শোভা খাতুন ও তার পরিবারের লোকেরা কোনোভাবেই তালাক দিতে সম্মত না হওয়ায় স্ত্রীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন তিনি।
বিয়ের কিছুদিন পর স্ত্রী শোভাকে লাগাতার শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেন রমজান আলী। পরে শোভা খাতুন নগরীর দাসপুকুরে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর ২০১৯ সালের ৪ মার্চ স্ত্রী শোভা খাতুন বাদী হয়ে ২০১৮ সালের যৌতুক ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের ৩ ধারা মতে প্রকৌশলী রমজান আলীকে আসামি করে রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিমের ( সিএমএম) আদালতে একটি মামলা করেন।
মামলায় বর্ণিত অভিযোগ মতে, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার সময় প্রকৌশলী রমজান আলী রেলওয়ের কতিপয় ঠিকাদার ও মাস্তান প্রকৃতির লোক নিয়ে শোভা খাতুনের বাবার বাড়ি দাসপুকুরে যান। সেখানে গিয়ে প্রকৌশলী রমজান আলী তার স্ত্রী শোভা খাতুনের পরিবারের কাছে যৌতুক হিসাবে নগদ পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।
চাহিদাকৃত টাকা না পেলে তালাক দেবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন। শোভা খাতুন ওই সময় জানান- তারা গরিব পরিবার। এতো টাকা দেয়া তাদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তিনি রজমান আলীর সঙ্গে ঘর-সংসার করতে চান ও স্বাভাবিক সাংসারিক জীবন যাপন করতে ইচ্ছুক। এই কথা শুনে রমজান আলী তাকে তালাক দিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যান।
শোভা খাতুন বলেন, ৫ লাখ টাকা তারা যৌতুক হিসেবে কোনো দিনই দিতে পারবেন না, এটা জেনেই একটা অজুহাত হিসেবে রমজান আলী টাকা দাবি করেন। যেন নিরুপায় হয়ে আমি তাকে তালাক দিয়ে মুক্ত করে দিই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শোভা খাতুনের দায়ের করা মামলাটি আমলযোগ্য কি-না তা নিশ্চিত হতে রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেন রাজশাহীর এনডিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমানকে।
এনডিসি আনিসুর রহমান গত ২০ মার্চ ঘটনার বিষয়ে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে এনডিসি লেখেন অভিযোগটি প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করা হলে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি আদালতের কাছে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেন।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৌশলী রমজান আলীর বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা মিলায় মামলাটি সরাসরি বিচারের জন্য রাজশাহীর মহানগর বিচারিক আদালত-৪ এ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
শোভা খাতুন বলেন, বিয়ের সময় রমজান আলী পরিবারকে জানিয়েছিলেন তার প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন। কিন্তু বিয়ের পর জানতে পারি তার প্রথম স্ত্রী বেঁচে আছেন। কয়েকটি সন্তানও আছে। প্রথম স্ত্রীকে রেখে তার সঙ্গে বিয়ের আগে রমজান আলী আরও একটি মেয়েকে বিয়ে করেন। সেই হিসেবে তার সঙ্গে তৃতীয় বিয়ে করেন তিনি।
তিনি জানান, পশ্চিম রেলের একজন নারী কর্মচারীকে যৌন হেনস্থার দায়ে রমজান আলী রেল কর্মচারীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন একবার। তবে এসব তিনি বিয়ের পর জানতে পারেন।
শোভা খাতুনের অভিযোগ , বেশ কিছুদিন তিনি বাবার পরিবারে রয়েছেন। এই সময়ে তার স্বামী রমজান আলী তাকে কোনো প্রকার খরচ দিচ্ছেন না। এখন মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য রাজশাহীর কিছু ঠিকাদার ও মাস্তান দিয়ে তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এই ভয়ে তিনি ঘর থেকেও বের হতে পারছেন না। রজমান আলী প্রভাবশালী হওয়ায় এবং সে বিপুল টাকা পয়সার মালিক হওয়ায় তিনি কোথাও অভিযোগ করতেও ভয় পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা-মংলা রেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. রমজান আলী স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, শোভা খাতুনকে আমি তালাক দিয়েছি। সে এখন আমার স্ত্রী নয়। টাকা-পয়সা আদায়ের জন্য শোভা খাতুন আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মাহবুব আলম জুয়েল
(প্রতিনিধি, এশিয়ান টেলিভিশন)
সহ- প্রকাশক: এমদাদুল হক মন্ডল
সহ- সম্পাদক: আশরাফুল ইসলাম রনজু
নির্বাহী সম্পাদক: সাহিন সরকার রনজু
সহ বার্তা সম্পাদক: হাফিজুর রহমান কিয়াস
উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যবৃন্দ :
(১) অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম (২) প্রভাষক রাকিবুল সরকার পাপুল (৩) প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমেদ (৪) ডাক্তার মিজানুর রহমান (৫) সহকারি শিক্ষক আব্দুল বারী
আইন উপদেষ্টা: এ্যাডভোকেট রায়হান কবির (সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর, রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালত)
-: যোগাযোগ :-
তানোর অফিস: রাফি কম্পিউটার্স, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে, মুন্ডুমালা রোড, তানোর, রাজশাহী।
রাজশাহী অফিস: মা কম্পিউটার, লোকনাথ স্কুল মার্কেট, হেতেমখাঁ, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।
ফোন: ০১৭১১-২৭০৪৩৩, ০১৫১৭-০৬৩১১৭
Email: mnewsbd24.2018@gmail.com
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া সকল ধরনের সংবাদ সারা বিশ্বে প্রচারে আমাদের তথ্য দিন।
আপনার প্রতিষ্ঠানটি সারা বিশ্বে পরিচিত করতে বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।